টিনিউজ ওয়ার্ল্ড, নিজস্ব সংবাদদাতা :-দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে মাদ্রাসা যে অসামান্য অবদান রেখেছিল সেটা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই । এমনকি বর্তমান সময়েও মুসলিম সমাজে মাদ্রাসাার গুরুত্ব ব্যাপক। আমাদের সমাজে অনেকে জানেন না মাদ্রাসাগুুলিতে অসংখ্য মুসলিম ছাত্র ছাত্রীর পাশাপাশি অনেক অমুসলিম ছাত্র ছাত্রীও পড়াশোনা করে। এবার সেই মাদ্রাসাগুলি কে নিশানা করে খবরের শিরোনামে চলে এসেছেন বিজেপি নেত্রী উসা ঠাকুর।
সম্প্রতি বিজেপি নেতাদের মাদ্রাসা নিয়ে একের পর এক মন্তব্য নিয়ে সরব হয়েছে দেশের বিভিন্ন মহল ।অন্যদিকে গত কয়েকদিন আগে অসমে বিজেপি সরকার মাদ্রাসা বোর্ড বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে।
এদিকে মন্ত্রী ঊষা ঠাকুরের মন্তব্য কে ঘিরে মধ্যপ্রদেশের রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে গেছে ।মধ্যপ্রদেশধ্যপ্রদেশ সরকারের ক্যাবিনেট মন্ত্রী উসা ঠাকুর মন্তব্য করেন ,
“সব মাদ্রাসায় সন্ত্রাসী তৈরি হয় তাই মাদ্রাসা বন্ধ করে দেয়া উচিত।”
এই মন্তব্যের তীব্র ভাষায় প্রতিবাদ জানান অল ইন্ডিয়া ইমামস কাউন্সিল এর সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুফতি হানিফ আহরার কাসেমী । তিনি বিজেপি মন্ত্রীর এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন যে, প্রকৃত ইস্যু থেকে জনগণের দৃষ্টি ফেরানোর লক্ষ্যে মাদ্রাসা কে অপমান করার চেষ্টা হচ্ছে, যার মাধ্যমে জনগণের মধ্যে সাম্প্রদায়িক ঘৃণা বিদ্বেষ ছড়িয়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে চাইছে।
তিনি আরও বলেন, সারাদেশ জানে যে, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ মাদ্রাসায় দেওয়া হয় না বরং আরএসএস তাদের বিভিন্ন শাখায় সন্ত্রাসী কার্যকলাপের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়ানোর লক্ষ্যে প্রকাশ্যে অস্ত্র বিতরণ, সেইসাথে অস্ত্র প্রশিক্ষণ, আরএসএস-এর লোকেরা করে থাকে, মাদ্রাসার লোকেরা করে না।
মহারাষ্ট্র, কেরালা, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশে আরএসএস এর বোম তৈরির কারখানা ধরা পড়েছে। এমন কাজে কোন মাদ্রাসা করে তার আজ পর্যন্ত প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এমন সন্ত্রাসী কার্যকলাপ থেকে নিজেদের আড়াল করার লক্ষ্যে মাদ্রাসা ও মাদ্রাসার পরিচালন কমিটির বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হচ্ছে।
সাধারণ সম্পাদক মহাশয় আরোও বলেন, যে সময়ে ইংরেজের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা যুদ্ধ চলছিল ওই সময়ে আর এস এস ও সংঘ পরিবারের নেতা গোলওয়ালকার ইংরেজের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে পত্র প্রেরণ করে, দেশ বিক্রি করছিল, অপরদিকে ঠিক একই সময়ে, মাদ্রাসার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা নিজেদের প্রান ও সম্পদ দিয়ে দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ করছিল।
সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মহাশয় আরোও জানান, যেভাবে এদেশের স্বাধীনতার সময় ইংরেজদের সহযোগিতা করে ক্ষতি করেছিল, ঠিক একইভাবে আজকেও ওই সংঘ পরিবার দেশকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে জনগণকে বিভ্রান্ত করে দেশের ক্ষতি করে চলেছে।
সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুফতি হানিফ আহরার কাসেমী সাহেব, আরো বলেন মাদ্রাসা ও ধর্মীয় শিক্ষা আসাম সরকার যেভাবে বন্ধ করার লক্ষ্যে ফরমান জারি করেছে, সেটাও সংঘ পরিবারের কর্মসূচির অংশ। আমরা ভারতীয় জনগণ, জাতি গঠনের পীঠস্থান মাদ্রাসার বিরুদ্ধে যেকোনো সিদ্ধান্তের তীব্র ভাষায় প্রতিবাদ জানাই। তিনি জোর দিয়ে বলেন,
“আমরা কোন মতেই এই সিদ্ধান্ত মেনে নেব না। এ ধরনের মন্তব্য দেশ ও দেশের একতা ও অখন্ডতার জন্য হুমকি যা দেশের ভবিষ্যত নষ্ট করবে”।