নিজস্ব সংবাদদাতাঃ প্রফেসর ড. জ়িয়াউর রহমান আ’জ়ামী একজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিশ্ববিখ্যাত পন্ডিত। অসংখ্য বইয়ের লেখক। পূর্ব নাম বাঙ্কেরাম। ১৯৪৩ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের আজমগড় জেলার বালরিয়াগঞ্জ গ্রামে এক হিন্দু ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। শৈশব থেকেই ধর্মের বিষয়ে প্রচণ্ড আগ্রহী ছিলেন। প্রবল আগ্রহের কারণে ছেলে বেলাতেই বিভিন্ন ধর্মীয় বিষয়ে নিজেই পড়াশোনা ও গবেষণা শুরু করেন। তাঁর অধ্যয়ন, পড়াশোনা ও গবেষণা তাঁকে ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট করে তোলে। অবশেষে ১৮ বছর বয়সে ইসলাম গ্রহণ করেন।
তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পড়াশোনা করেছেন। মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং মক্কার উম্মুল কুরা ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টার্স করেন। তারপর মিশরের বিখ্যাত আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট করেন।
কর্ম জীবনে তিনি নানা কাজ ও নানা দায়িত্ব অত্যন্ত মনোযোগ ও দায়িত্ব সহকারে পালন করেছেন। মক্কা মুকার্রামায় অবস্থিত রাবেত়া ‘আলম-ই-ইসলামী’র বিভিন্ন পদে নিযুক্ত ছিলেন দীর্ঘদিন। শেষে ওই সংস্থার জেনারেল সেক্রেটারী পদও অলংকৃত করেন। এছাড়া ১৩৯৯ হিজরীতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রোফেসর হিসেবে শিক্ষকতার জীবন শুরু করেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ডক্টরেট থিসিসগুলো নিরীক্ষণ এবং খসড়া তৈরি করার গুরুত্বপূর্ণ কাজও তিনিই সম্পাদন করতেন। এসবের পাশাপাশি আল্-বাহ়সুল্ ‘ইল্মী’র পরিচালক, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ম্যাগাজিন-এর সদস্য এবং হাদীস অনুষদের অধ্যক্ষ ছিলেন।
গবেষণা ও দাওয়াহ্ সহ নানা কাজে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেছেন, বিশেষ করে ভারত, পাকিস্তান, মিশর, জর্ডন, অস্ট্রেলিয়া, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, নেপাল, যুক্তরাজ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাত ইত্যাদি দেশে একাধিক বার ভ্রমণ করেছেন।
এছাড়া তিনি নিয়মিত মসজিদে নববীতে স়াহ়ীহ় বুখ়ারী এবং স়াহ়ীহ় মুসলিমের দার্স (পাঠ) দান করতেন। বিখ্যাত স়াহাবি আবু হুরায়রার পক্ষে থিসিস করে আবু হুরায়রার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ খণ্ডন করেন। তিনি হিন্দি এবং আরবী উভয় ভাষায় বহু গ্রন্থ রচনা এবং সংকলন করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি একাগ্রতার সাথে অধ্যয়ন ও গবেষণা কর্মে লিপ্ত ছিলেন। সপ্তাহ খানেক আগে হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন এবং গতকাল (৩০ জুলাই, ২০২০) জোহর নামাযের কিছুক্ষণ আগে ইহলোক ত্যাগ করেন— ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজে’উন।