নিজস্ব সংবাদদাতা টি নিউজ ওয়ার্ল্ডঃ নন্দীগ্রাম থেকে মমতার হুঙ্কার, ‘ধর্ম নিয়ে খেলবেন না’
(পূ:মে:)-: নন্দীগ্রাম থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জোরালো কন্ঠে ঘোষণা, ‘নিজের নাম ভুলতে পারি, কিন্তু নন্দীগ্রামের নাম কোনওদিন ভুলব না।’ বেশ কয়েকদিন ধরেই বিরোধীরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন তার নিজের কেন্দ্র ভবানীপুর ছেড়ে নন্দীগ্রামে দাঁড়ালেন সেই নিয়ে কটাক্ষ করে যাচ্ছিলেন। আজ সেই কটাক্ষের জবাব দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তিনি নাম না করে বলেন, ‘অনেকেই মনে করছে কেন দাঁড়ালাম না ভবানীপুর থেকে। ভবানীপুর তো আমার বাড়ির কাছেই। প্রতিদিনই আমি প্রায় ওই পথ দিয়ে যাতায়াত করি। কিন্তু নন্দীগ্রামকেই আমি বেছে নিয়েছি। কারণ আমার দুচোখে নন্দীগ্রাম। নন্দীগ্রামই আমাকে সম্প্রীতি শিখিয়েছে। আজ সারা বিশ্বে নন্দীগ্রামের নাম পৌঁছে গিয়েছে। দিল্লিতেও আমি নন্দীগ্রামের নাম পৌঁছে দিয়েছি।’
মমতা এদিন বলেন, ‘আমার মাথায় ছিল সামনেই ভোট। মাথায় ছিল সিঙ্গুর বা নন্দীগ্রাম থেকে দাঁড়াব। কৃষি আন্দোলনকে ঘিরে সিঙ্গুর আর নন্দীগ্রামকে মিলিয়েছিলাম’। শেষবার যখন এসেছিলাম, তখন কথা দিয়েছিলাম। আমি কথা দিলে কথা রাখতে জানি।’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন নন্দীগ্রামে নিজের লড়াইয়ের কথা তুলে ধরে বলেন, ‘১৪ মার্চে নন্দীগ্রামে গুলি চলেছিল। হাসপাতালে ছিলাম আমি। আনিসুরের বাইকে করে এসে নন্দীগ্রামে পৌঁছাই। আমার গাড়ির ওপর হামলা হতে পারে বলে তৎকালীন রাজ্যপাল আমাকে ফোন করে জানান।’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বিজেপির দিকে তোপ দেগে বলেন, ‘আজ আমাকে বলা হচ্ছে বাইরের লোক। আমি বাংলার মেয়ে, আমি বাইরের লোক হলাম কিভাবে? আজ যারা গুজরাট থেকে আসছে তারা বাংলার লোক হয়ে গেল!
মানুষে মানুষে ভাগাভাগি হয় না বলে সুর চড়িয়ে মমতা বলেন, ‘আমি হিন্দুর মেয়ে, আমাকে আজ হিন্দু ধর্ম শেখানো হচ্ছে।’ নন্দীগ্রামের মঞ্চ থেকেই মমতার হুঙ্কার, ‘ধর্ম নিয়ে খেলবেন না।’
সম্প্রতি ব্রিগেডে এসে ‘খেলা হবে’ স্লোগানকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, ‘খেলা হবে, আমি খেলার জন্য প্রস্তুত আছি’।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন সেই প্রসঙ্গকে তুলে ধরে বলেন, ‘১ এপ্রিল নন্দীগ্রামে খেলা হবে। খেলা হবে, দেখা হবে, জেতা হবে’।
কর্মিসভা থেকে সকলের উদ্দেশ্যে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, ‘নানা রকম চক্রান্ত চলছে। চক্রান্তে পা দেবেন না।’
এদিন তিনি বলেন, ‘আমি একবছরের জন্য নন্দীগ্রামে ঘর ভাড়া নিয়েছি। তিন মাস অন্তর আমি এখানে আসব।
নন্দীগ্রামের মানুষের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, ‘আগামীদিনে আমরা নন্দীগ্রামকে মডেল করব। হলদিয়া থেকে নন্দীগ্রাম পর্যন্ত ব্রিজ করব।’
মঙ্গলবার প্রার্থী হওয়ার পর এই প্রথম নন্দীগ্রামে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হেলিকপ্টারে এখানে এসে পৌঁছান তিনি। দলীয় সভায় যোগ দেন।