অন্য দলের নেতারা ‘গ্রহণযোগ্য’ হননি, অনুমান বিজেপি নেতৃত্বের

0
Spread the love

নিজস্ব সংবাদদাতা ;টি নিউজ ওয়ার্ল্ড:- প্রার্থিপদ নিয়ে দলীয় কর্মীদের একাংশের মধ্যে ‘অসন্তোষ’ ছিল। দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে তা ‘ধামাচাপা’ পড়েছিল। কিন্তু ফল বেরনোর পরে দুর্গাপুর পূর্ব কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দীপ্তাংশু চৌধুরীর পরাজয়ের জন্য দলীয় কোন্দলকেই দায়ী করছেন দলের কর্মীদের বড় অংশ। তৃণমূল প্রার্থী প্রদীপ মজুমদারের কাছে ৩,৭৪৬ ভোটে পরাজিত হয়েছেন দীপ্তাংশু। হারের নেপথ্যে দলের ‘আদি-নব্য’ কোন্দল রয়েছে বলে প্রাথমিক অনুমান বিজেপি নেতা-কর্মীদের একাংশের।

ডিএসপি টাউনশিপে বহিরাগত লোকজন জড়ো হয়ে বিজেপির পক্ষে ভোট করাচ্ছে বলে ভোটের দিন অভিযোগ করেছিলেন দুর্গাপুর পূর্বের তৃণমূল প্রার্থী প্রদীপ মজুমদার। দুর্গাপুর পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দু’টি বুথ এলাকা থেকেও একই অভিযোগ আসে। যদিও, ফলাফল প্রকাশের পরে দেখা গিয়েছে, ওই ওয়ার্ডে প্রদীপবাবুর থেকে ১১৫ ভোট কম পেয়েছেন দীপ্তাংশুবাবু। বিজেপির এক নেতার ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, ‘‘সর্ষের মধ্যে ভূত না থাকলে এমনটা হয় না।’’

তৃণমূল ছেড়ে আসা দীপ্তাংশুবাবুকে প্রার্থী করায় প্রকাশ্যেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন ওই কেন্দ্রে টিকিটের অন্যতম ‘দাবিদার’ দুর্গাপুরের ‘ভূমিপূত্র’ অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুগামীরা। পরে দুই গোষ্ঠীকে নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে বিজেপি নেতৃত্ব দাবি করেন, সমস্যা মিটে গিয়েছে। যদিও দীপ্তাংশুবাবুর হয়ে প্রচারে দেখা যায়নি অমিতাভবাবুকে। নেতৃত্বের একাংশ মনে করছেন, সে দিন সমস্যা ‘ধামাচাপা’ দেওয়া হয়েছিল। এই অনুমান যে ভিত্তিহীন নয়, তার ইঙ্গিত মিলেছে অমিতাভবাবুর মন্তব্যে।

সোমবার অমিতাভবাবু বলেন, ‘‘অন্য দল থেকে আসা যে সব নেতাদের প্রার্থী করা হয়েছিল, তাঁদের মানুষ যে ভরসা করেননি, ভোটের ফলাফলেই তা প্রমাণিত। দুর্গাপুর পূর্ব কেন্দ্রটিও তার ব্যতিক্রম নয়। দলের কোনও কর্মীকে প্রার্থী করা হলে নিশ্চিত ভাবে এই আসনে আমাদের জয় আসত।’’ সেই সঙ্গে দীপ্তাংশুবাবু দাবি করেছেন, ‘‘জয়ী প্রার্থী এবং আমি— দু’জনেই প্রায় ৪০ শতাংশ ভোট পেয়েছি। অর্থাৎ, দুর্গাপুরের মানুষ দু’জনের উপরেই আস্থা রেখেছেন।’’ বিজেপির প্রাক্তন জেলা সভাপতি তথা দুর্গাপুর পশ্চিম কেন্দ্রের জয়ী প্রার্থী লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন, ‘‘ফলাফলের পর্যালোচনা হবে। এটা থেকে শিক্ষা নেব।’’

বিজেপির কাছে ‘সম্ভাবনাময়’ বারাবনি এবং আসানসোলেও পরাজিত দলের প্রার্থীরা। সেখানেও কোন্দল-কাঁটা জয়ের পথে অন্তরায় হয়েছে বলে ধারণা নেতৃত্বের একাংশের। বারাবনির বিজেপি প্রার্থী অরিজিৎ রায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, যুবমোর্চার জেলা সভাপতি হওয়ার পরে তিনি পুরনো কর্মীদের গুরুত্ব দেননি। ‘বিদ্রোহী’ কর্মীরা রাজ্য ও জেলা নেতৃত্বের কাছে এ নিয়ে চিঠিও পাঠিয়েছিলেন। অরিজিৎকে দলের প্রার্থী না করারও দাবিও তোলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁকেই প্রার্থী করে দল। এর ফলে ‘কোন্দল’ আরও তীব্র হয়, যার প্রতিফলন ভোটের ফলে পড়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।

ভোটের আগে আসানসোল উত্তর কেন্দ্রেও বিজেপির ‘কোন্দল’ প্রকাশ্যে এসেছিল। নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, প্রার্থী কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়কে মেনে নিতে পারেননি দলেরই একাংশ। সদ্য তৃণমূল থেকে বিজেপিতে আসা এক নেতা টিকিট পাওয়ার দৌড়ে ছিলেন। কৃষ্ণেন্দুবাবুকে মেনে নিতে পারেননি তিনি। ফলে, তীব্র হয় ‘কোন্দল’। বিজেপির জেলা আহ্বায়ক শিবরাম বর্মনের প্রতিক্রিয়া, ‘‘হারের কারণ অনুসন্ধান করবেন জেলা ও রাজ্য নেতৃত্ব।’’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here