ঢেঁড়স চাষ পদ্ধতি।

0
Spread the love

নিজস্ব প্রতিবেদন ; টি নিউজ ওয়ার্ল্ড:-ঢেঁড়স চাষ পদ্ধতি।

ঢেঁড়স এদেশের একটি জনপ্রিয় সবজি। এটি অত্যন্ত পুষ্টি সমৃদ্ধ সবজি, যা আজকাল প্রায় সারা বছরই পাওয়া যায়। যদিও বর্ষাকালে এর উৎপাদন বেশি হয়। খাদ্যোপযোগী ১০০ গ্রাম ঢেঁড়সে যেসব পুষ্টি উপাদান রয়েছে তা হলো ক্যারোটিন ১৬৭০ মাইক্রোগ্রাম, ক্যালসিয়াম ১১৬ মি: গ্রা:, শর্করা ৮.৭ এমি, আমিষ ১.৮ গ্রাম, স্নেহ ০.১ গ্রাম, লৌহ ১.৫ মি: গ্রা:, ভিটামিন বি ০.২০ মি: গ্রা:, ভিটামিন সি ১০ মি: গ্রা:, খাদ্য শক্তি ৪৩ কিলোক্যালরি। ঢেঁড়সে রয়েছে প্রচুর ক্যারোটিন ও ক্যালসিয়াম। এই ক্যারোটিন আমাদের অন্ত্রে গিয়ে ভিটামিন-‘এ’ তৈরি করে। এছাড়া ঢেঁড়সে বিভিন্ন খনিজ পদার্থ রয়েছে। ঢেঁড়শ নিয়মিত খেলে গলাফোলা রোগ হবার সম্ভাবনা থাকে না এবং এটা হজম শক্তি বৃদ্ধিতেও সহায়তা করে।

মাটি :দোআশ ও বেলে দোআশ ঢেঁড়শ চাষের জন্য সবচেয়ে উপযোগী। পানি নিষ্কাশনের সুবিধা থাকলে এটেল মাটিতেও চাষ করা যায়

জাত :শাউনি,পারবনি কানি-, বারী ঢেঁড়শ, পুশা সাওয়ানী, পেন্টা গ্রীন, কাবুলী ডোয়ার্ফ, জাপানী প্যাসিফিক গ্রীন এসব ঢেঁড়শের চাষ উপযোগী জাত। শেষের দুটো জাত সারা বৎসর ব্যাপী চাষ করা চলে।

সময়:সারা বছরই চাষ করা যায়। তবে সাধারণতঃ গ্রীষ্মকালে এর চাষ করা হয়। ফাল্গুন চৈত্র ও আশ্বিন-কার্তিক মাস বীজ বোনার উপযুক্ত সময়।

বীজের পরিমাণ :প্রতি শতকে ২০ গ্রাম, হেক্টর প্রতি ৪- ৫ কেজি বীজ লাগে।

বীজ বপন :বীজ বোনার আগে ২৪ ঘন্টা ভিজিয়ে নিতে হয়। গভীরভাবে চাষ ও মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে চাষের জমি তৈরি করতে হয়। মাটি থেকে সারির দুরত্ব হবে ৭৫ সেমি.। বীজ সারিতে ৪৫ সেমি. দূরে দূরে ২-৩ টি করে বীজ বুনতে হয়। জাত অনুযায়ী চারা থেকে চারা এবং সারি থেকে সারির দুরত্ব ১৫ সেমি. কমানো বা বাড়ানো যেতে পারে। শীতকালে গাছ ছোট হয় বলে দূরত্ব কমানো যেতে পারে। চারা গজানোর পর প্রতি গর্তে একটি করে সুস্থ সবল চারা রেখে বাকী চারা গর্ত থেকে উঠিয়ে ফেলতে হবে।

সারের পরিমাণ :সার এক শতকে হেক্টর প্রতিঃ গোবর ৭৫ কেজি ১৮ টন;

সরিষার খৈল ১.৭৫ কেজি ৪২৫ কেজি
ইউরিয়া ২৩০ গ্রাম গ্রাম ৫৫-৬০ কেজি
টিএসপি ৩৫০ গ্রাম গ্রাম ৮৫-৯০ কেজি
এমও পি ২৩০ গ্রাম গ্রাম ৫৫-৬০ কেজি

সার প্রয়োগের নিয়ম :জমি তৈরি করার সময় ইউরিয়া সার বাদে বাকি সব সার মাটির সাথে ভালভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। সার মেশানের ১০-১৫ দিন পর জমিতে ঢেঁড়শ বীজ বপন করতে হয়। ইউরিয়া সার সমান দু‘কিস্তিতে উপরি প্রয়োগ করতে হয়। প্রথম কিস্তিতে চারা গজানোর ২০-২৫ দিন পর এবং ২ য় কিস্তিতে দিতে হবে চারা গজানোর ৪০-৫০ দিন পর।

পরিচর্যাঃ নিড়ানী দিয়ে মাটির উপরিভাগ মাঝে মাঝে আলগা করে দিতে হবে। জমি সব সময় আগাছা মুক্ত রাখতে হবে। মাটির প্রকার ভেদ অনুযায়ী ১০/১২ দিন পর পর সেচ দেয়া প্রয়োজন। প্রতি কিস্তিতে সার প্রয়োগের পর জমিতে সেচ দিতে হবে। 

পোকামাকড় :ঢেড়শের ফল ছিদ্রকারী পোকাই সবচে বেশি ক্ষতি করে। এ ছাড়া জাব পোকা, সাদা মাছি, ছাতরা পোকা, লাল গান্ধি ইত্যাদিও ক্ষতি করে।

রোগ ব্যবস্থাপনাঃহলদে শিরা স্বচ্ছতা ঢেঁড়শের প্রধান ক্ষতিকর রোগ। এ ছাড়া মোজেইক ও পাতায় দাগ রোগও দেখা যায়।

ফসল সংগ্রহ:বীজ বোনার ৬-৮ সপ্তাহের মধ্যে এবং ফুল ফোটার ৩-৫ দিনের মধ্যে ফল আসা শুরু হয়। জাত ভেদে ফল ৮-১০ সেমি. লম্বা হলেই সংগ্রহ করতে হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here