নিজস্ব সংবাদদাতা ;টি নিউজ ওয়ার্ল্ড:-কেউ বলছেন ‘গোখরো দা’, কারোর কাছে ‘গোখরো কাকু’। তবে সবাই হন্যে হয়ে খুঁজছেন। বঙ্গ রাজনীতির গোখরো বলে আচমকা নিজেকে দাবি করা বিজেপি প্রচারক মিঠুন চক্রবর্তীর পাত্তা নেই। ফল ঘোষণার পর তৃণমূল কংগ্রেসের দ্রুত এগিয়ে যাওয়া ও বিজেপির ‘সুনার বঙ্গাল’ গড়ার স্বপ্ন ততোধিক দ্রুত ভেঙে যাওয়ার মাঝে গোখরো কই প্রশ্নে সরগরম সোশ্যাল মিডিয়া।
সকাল থেকেই রাজ্যবাসী গোখরো খুঁজতে তুমুল ব্যস্ত। কেউ পাননি। ফলাফল অনুকুলে নেই দেখে নীরবতার পথ নিয়েছেন অভিনেতা তথা বিজেপি প্রচারক মিঠুন। তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ ছেড়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীর উপস্থিতিতে ব্রিগেড জনসভায় হাজির হন মিঠুন। সেই জনসভায় তিনি বলেন ‘আমি গোখরো।’
রাজনৈতিক পক্ষত্যাগ মিঠুন বারবার করেছেন। ভরা বাম জমানায় সিপিআইএমের ঘনিষ্ঠ। তাদের হয়ে ভোট প্রচার। পরে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ নিয়ে প্রচার ও রাজ্যসভার সদস্য। মহারাষ্ট্রে গিয়ে শিব সেনার সঙ্গে দহরম মহরমে ছিলেন মিঠুন। সর্বশেষ বিধানসভা ভোটের আগে টিএমসি ছেড়ে বিজেপি হয়েছেন। ব্রিগেডের সেই সমাবেশ থেকে মিঠুন তাঁর ভাষণে গোখরো সাপের মতো ছোবল মারার কথা বলে ভিড় জমিয়েছিলেন।
পুরো নির্বাচনী প্রচারপর্বে মিঠুনের সেই গোখরো ডায়লগ বারবার এসেছে আলোচনায়। তারকা প্রচারককে গোটা রাজ্যে ঘুরিয়েছিল বিজেপি। প্রতিটি জনসমাবেশে তাঁকে দেখতে ভিড় উপচে পড়ে। সেই সঙ্গে শুরু হয় প্রতিপক্ষ তৃণমূল শিবিরের কটাক্ষ। সোশ্যাল মিডিয়ার বিজেপি বিরোধী বিভিন্ন গ্রুপ থেকে মিঠুন কে গোখরো দা, গোখরো কাকু নামে ব্যাঙ্গ করা হতে থাকে। তার সঙ্গে তাঁরই অভিনীত বিভিন্ন ছবির মুহূর্ত দিয়ে মিমের বন্যা শুরু হয়।
রবিবার ফল ঘোষণার সাথে সাথে মিঠুন ফের ব্যাঙ্গাত্মক শিকারে পরিণত হন। ‘গোখরো কোথায়?’ প্রশ্নে তাঁকে বিদ্ধ করে শুরু হয়ে মন্তব্য বর্ষণ পালা। যদিও দিনভর মিঠুন ছিলেন বেপাত্তা।
নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস টানা তৃতীয়বার রাজ্যের ক্ষমতায় এলো। কিন্তু পাল্টে গেল বিধানসভার বিরোধী পক্ষের রাজনৈতিক রঙ। ২০১১ সাল থেকে সিপিআইএম, ২০১৬ থেকে কংগ্রেস হয়ে এবার বিজেপি হয়েছে বিরোধী। ভোটে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে বাম কংগ্রেস ও আইএসএফ জোটের সংযুক্ত মোর্চা। প্রশ্ন উঠছে, বিরোধী বিজেপি শিবিরের জয়ী বিধায়করা কতদিন পদ্মফুল আঁকড়ে থাকবেন। লোকসভা ভোটের পর যেভাবে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি যাওয়ার হিড়িক লেগেছিল তার উল্টো এখন বিজেপি ছেড়ে যাওয়ার ছবি উঠে আসতে চলেছে। এমনই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।