নিজস্ব সংবাদদাতাঃ কেন্দ্র মন্ত্রী সভায় পাশ হল নতুন শিক্ষা নীতি। গতবছর জুন মাসে শিক্ষানীতির খসড়া প্রকাশিত হয়, যেখানে নানা মহলের মতামত চাওয়া হয়েছিল। সেই মতামত চাওয়ার শেষ তারিখ ছিল ২০১৯ সালের ৩১শে জুলাই।
উচ্চ শিক্ষা মন্ত্রকের সচিব অমিত খারে জানিয়েছেন ৩৪ বছর বাদে নতুন শিক্ষানীতি চালু হচ্ছে দেশে। ১৯৮৬ সালে চালু হওয়া ১৯৯২ সালে সংশোধিত হয়, জানা গিয়েছে বিভিন্ন রাজ্য সরকারের কর্তা ও শিক্ষাবিদের মতামত নিয়েই তৈরী করা হয়েছে নয়া শিক্ষানীতি ।
- নয়া শিক্ষানীতিতে জাতীয় একাডেমিক ক্রেডিট ব্যাঙ্কের ( এন এসি বি ) প্রস্তাব কে মান্যতা দেওয়া হয়েছে । যার মারফত কোনো কোর্স শেষ করার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা ওই ক্রেডিট ব্যাঙ্ক মারফত টাকা জমা করতে পারবে। এটি একটি কোর্স বা ইন্সটিটিউট থেকে সহজেই অন্য কোর্সে স্থানান্তর করতে পারবে।
- নতুন শিক্ষানীতিতে একাধিক ভাষাগত শিক্ষা ব্যবস্থার দিকে মনোনিবেশ করা হবে। শিক্ষকরা কেবল ইংরেজিতেই নয়, ভারতীয় সমস্ত আঞ্চলিক ভাষাতেও শিক্ষাদান করতে হবে তাদের। এম এইচ আর ডি ইতিমধ্যেই অনান্য রাজ্যে শিক্ষার্থীদের আঞ্চলিক ভাষা শেখানোর জন্য পর্যালোচনা মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
- নতুন শিক্ষানীতিতে থাকছে ২২টি ভাষা। পাশাপাশি থাকছে অডিও বই ও।
- বন্ধ করা হচ্ছে এম ফিল, স্নাতক স্নাতকোত্তর এর পর থাকছে পি এইচ ডি।
- ভারতে মোট তালিকাভুক্ত পড়ুয়ার অনুপাত ২০৩৫ সালের মধ্যে ৫০ শতাংশ করতে হবে।
- শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অতিরিক্ত ফি নেওয়া যাবে না। কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়মাবলি মেনেই তৈরী করতে হবে বেতনের পরিকাঠামো।
- আঞ্চলিক ভাষায় ই- কোর্সের ব্যবস্থা থাকবে। শিক্ষাদান, মূল্যায়ন, এবং শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের মধ্যে থাকবে প্রযুক্তির ব্যবহার। ই- কোর্সের ব্যবহার অনুযায়ী পঠন পাঠন আঞ্চলিক ভাষায় উপলভ্য থাকবে। হিন্দি এবং ইংলিশ ভাষার পাশাপাশি প্রথম পর্যায়ে প্রধান ভাষা যেমন কন্নাডা, ওড়িয়া, বাংলা , ভাষা কোর্সের ব্যবস্থা থাকবে।
- জাতীয় শিক্ষানীতি অনুযায়ী স্কুল স্তরের যাবতীয় পরীক্ষা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন ( এম এইচ আর ডি) মন্ত্রক । নতুন পদ্ধতিতে ৫+৩+৩+৪ শ্রেনী ভিত্তিক মূল্যায়ন চালু হবে। বোর্ড গুলির এবং শিক্ষাবিদদের সুপারিশ পাওয়ার পরই ১০+২ কাঠামো বাতিল করা হবে। এবং ২০২১ সাল থেকেই নয়া মূল্যায়ন ব্যবস্থা চালু হবে।
- শিক্ষা ব্যবস্থার একদম গোড়া থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষন কালকে মোট চার ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রাক প্রাথমিকের তিন বছর এবং প্রথম- দ্বিতীয় শ্রেণীকে নিয়ে পাঁচ বছরের ভিত্তি শিক্ষাকালকে চিহ্নিত করা হয়েছে প্রথমে। এরপর তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত সময় কালকে প্রস্তুতি পর্ব হিসেবে সুপারিশ করা হয়েছে। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত সময়কালকে মধ্যবর্তী সময়কাল ধরা হয়েছে। এবং নবম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মোট চার বছরকে ‘সেকেন্ডারী’ স্তর রূপে সুপারিশ করা হয়েছে।
- ক্লাস ফাইভ ও এইটে থাকছে বোর্ডের পরীক্ষা ।
- শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার মাঝে লম্বা ছুটি নিতেও পারবে। এই ধরনের ছুটিকে বলা হয় “স্যাবাটিকাল” । কতদিনের ছুটি নিতে পারবে তা স্থির করবে উচ্চ শিক্ষা কমিশন। শিক্ষার্থীরা নিজের পছন্দমতো মেজর ও মাইনর সাবজেক্ট বাছতে পারবে। কলেজ গুলোকে দেওয়া হবে স্বশাসন ।
- ষষ্ঠ শ্রেণি থেকেই কোডিং শিখতে পারবে পড়ুয়ারা ।
- বোর্ড পরীক্ষার পদ্ধতি বদলাতে হবে। সি বি এস ই-র জন্য সমস্ত কোর্স দুটি ভাগে ভাগ করা হবে। প্রতিটি বিষয়ের পরীক্ষা হবে অবজেক্টিভ ও বর্ণনা মূলক প্রশ্নের উপর।
- স্নাতক স্তরে ভর্তি হওয়ার জন্য শুধুমাত্র একটি পরীক্ষা দিতে হবে। তবে এটি এখনই বাধ্যতামূলক নয়।
- ভাষা, সাহিত্য, সংগীত, দর্শন, শিল্প, নৃত্য, থিয়েটার, গণিত, পরিসংখ্যান, বিজ্ঞান, সমাজ বিজ্ঞান, অর্থনীতি, ক্রীড়া, ইত্যাদি বিভাগে উচ্চ শিক্ষাকে প্রতিষ্ঠিত ও জোরদার করা হবে ইন্সটিটিউট গুলোতে।
- ১০০টি বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় ভারতে তাদের ক্যাম্পাস খুলতে চলেছে।
- সংস্কৃত ভাষাকে মূল ভাষা হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করা হবে স্কুল স্তরে ।