মিথ্যে চুরির অপবাদ সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা এক গৃহবধূর! “মিথ্যা অপবাদ নিয়ে বাঁচা আমার পক্ষে অসম্ভব”! সুইসাইড নোটে উল্লেখ টিনার
সামসুজ্জামান * জলঙ্গি
টি নিউজ ওয়ার্ল্ড, নিজস্ব সংবাদদাতাঃ মিথ্যে চুরির অপবাদে প্রাণ হারাতে হল এক গৃহবধূকে। চোর অপবাদ সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন টিনা হালদার (২৩) নামে এক গৃহবধূ। ঘটনাটি ঘটেছে জলঙ্গি থানার সাহেবরামপুর গ্রামে।
শনিবার বেলা সাড়ে তিনটে নাগাদ গলায় ওড়না লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন বলে জানা যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহ উদ্ধার করে। গ্রেফতার হয় অভিযুক্ত টিনার স্বামী বিপুল সরকার, শ্বশুর এবং শাশুড়ি। জ্যাঠা শ্বশুর, জ্যাঠা শ্বাশুড়ি, বিপ্লব সরকার এবং তার স্ত্রী রিনা সরকার এর সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত আছে বলে অভিযোগ। তারা এখন পলাতক। তাদের তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, টিনার শ্বশুর বাড়ি থেকে তার জা এর সোনার গহনা চুরি হয়ে যায়। যার সম্পূর্ন দোষ টিনার ঘাড়ে চাপানো হয়। এই চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রায় সপ্তাহ খানেক ধরে চলে তার উপর মানসিক এবং শারীরিক অত্যাচার। শেষ পর্যন্ত সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন টিনা। মৃত্যুর আগে তিনি একটি চিঠিতে সবকিছু খুব পরিষ্কার করে লিখে যান। তাকে কানের দুল চুরির মিথ্যে অপবাদে শ্বশুর বাড়ির লোক সহ পাশের বাড়ির জ্যাঠা শ্বশুর, জ্যাঠা শ্বাশুড়ি, বিপ্লব সরকার এবং তার স্ত্রী রিনা প্রত্যেকেই খুব মানসিক এবং শারীরিকভাবে অত্যাচার করে বলে জানিয়েছেন টিনা।
শ্বশুর বাড়ির লোকেরা প্রায় সপ্তাহ খানেক ঘরে এই বিষয়কে কেন্দ্র করে টিনাকে মানসিক এবং শারীরিক অত্যাচার করে। তাদের দাবি টিনা কানের দুল চুরি করেছে। এমন বদনাম এবং মানহানির বিষয়টি কোন ভাবেই গ্রহন করতে পারছিলো না টিনা। তাই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়।
টিনার দাদা পাপ্পু হালদার বলেন, এই ঘটনার সাথে সম্পূর্ন ভাবে জড়িত টিনার শ্বশুর বাড়ির লোকজন। পাশের বাড়ির জ্যাঠা শ্বশুর, শ্বাশুড়ি, বিপ্লব সরকার ও তার স্ত্রী রিনা সরকার এই ঘটনার পিছনে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত রয়েছে। যদিও টিনার লেখা চিঠিতে এদের নাম স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। তিনি আরও বলেন জড়িত রয়েছে একজন তান্ত্রিক, যে নাকি সমস্ত দোষ টিনার ঘাড়েই চাপিয়েছে বলে অভিযোগ।
টিনার বাবার বাড়ি চোয়াপাড়া গ্রামে। টিনার শোকে পুরো গ্রাম এখন শোকাচ্ছন্ন। বাড়ির একটি মাত্র মেয়ে। কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তার পরিবারের লোকজন। তাঁর বাবা অরুন হালদার সম্পূর্নভাবে ভেঙে পড়েছেন। কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের সকলেই।
ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে জলঙ্গি থানায় একটি এফ.আই.আর করা হয়। পুলিশ এর সঠিক তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন। প্রত্যেক অভিযুক্তকে আইনের আওতায় নিয়ে এশে তাদের সুবিচারের কোনরকম ত্রুটি রাখবেন না বলে আশ্বাস দিয়েছেন।