৩ সপ্তাহেই বাংলায় ৩ হাজার ছোঁবে দৈনিক আক্রান্ত

0
Spread the love

নিজস্ব সংবাদদাতা; নিউজ ওয়ার্ল্ড:– ৩ সপ্তাহেই বাংলায় ৩ হাজার ছোঁবে দৈনিক আক্রান্ত। সপ্তাহ দুয়েকের বেশি সময় ধরে বাংলায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যাটা ২০০-র ঘরে ঘোরাফেরা করছিল। তার পর কিছুটা বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৩০০-র ঘরে। কিন্তু গত এক সপ্তাহে লাফিয়ে বাড়তে বাড়তে তা ৮০০-র ঘরে পৌঁছে গিয়েছে। গত সোমবার, ২২ মার্চ দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩৬৮। ঠিক এক সপ্তাহ শেষে, রবিবার (২৯ মার্চ) দেখা গেল, ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে ৮২৭ জন কোভিড পজিটিভ চিহ্নিত হয়েছেন। দু’-চার দিনের মধ্যেই সংখ্যাটা হাজার ছাড়াবে বলে আশঙ্কা স্বাস্থ্যকর্তাদের।
প্রথম ঢেউয়ের সময়ে, গত বছর জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহেও এমনই ৮০০-৮৫০ জন দৈনিক আক্রান্ত চিহ্নিত হতেন। আনলক পর্বের হরেক বিধিনিষেধ সত্ত্বেও তখন দেখা গিয়েছিল, তিন সপ্তাহের মাথায়, অর্থাৎ জুলাইয়ের শেষে সংখ্যাটা প্রায় তিন গুণ হয়ে গিয়েছিল সে বার। গত ৭ জুলাই ৮৫০ জন করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলেছিল ২৪ ঘণ্টায়। এর ঠিক ২১ দিন পরে ২৮ জুলাই দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ২,১৩৪ জনে। অনেকের মনেই প্রশ্ন, এ বারও কি তা-ই হবে? বিশেষজ্ঞরা অবশ্য মনে করছেন না, এ বারের ঢেউ হবে আরও খারাপ।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ দলুইয়ের ব্যাখ্যা, ‘এখন তো সবই চলছে খুল্লমখুল্লা। জনজীবনের এমন কোনও অঙ্গ নেই, যা কোভিডের ভয়ে বন্ধ আছে। উল্টে, এর সঙ্গেই যোগ হয়েছে রবি ও সোমবারে উদ্দাম দোল-হোলি উদ্‌যাপন এবং সর্বোপরি, নির্বাচনী প্রচারের লাগাতার জনসমাগম।’ তিনি মনে করিয়ে দিচ্ছেন, গত বছর জুলাইয়ে কিন্তু এমনটা ছিল না। চলত না ট্রেন, বন্ধ ছিল সিনেমা হল, মাল্টিপ্লেক্স। খুললেও শপিং মল বা রেস্তোরাঁয় এখনকার মতো ভিড় ছিল না। এবং জনজীবনে মাস্কের ব্যবহারও ছিল ঢের বেশি। কিন্তু এখন সে সবের বালাই নেই।
ফলে দ্বিতীয় ঢেউয়ে ভেসে যাওয়ার সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে এ বার স্বাস্থ্যভবনের জনস্বাস্থ্য শাখার অফিসাররা আশঙ্কা করছেন, আগামী তিন সপ্তাহে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যাটা তিন গুণেরও অনেক বেশি হবে। অর্থাৎ, পয়লা বৈশাখের পরেই হয়তো রোজ আড়াই-তিন হাজারের আশেপাশে কোভিড পজিটিভ চিহ্নিত হবেন বাংলায়। মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অরিন্দম বিশ্বাসের কথায়, ‘বাংলাজুড়ে ভোটের মিটিং-মিছিল তো রয়েছেই। এর জন্যও যে করোনা বাড়ছে, সন্দেহ নেই। আর দোল ও হোলিতে মানুষ যে ভাবে বিধি শিকেয় তুলে আনন্দ করলো, কোভিডের আয়নায় তার সাফ প্রতিফলন দেখা যেতে বাধ্য ১০-১৪ দিনের মাথাতেই। এ বছরে অন্তত সকলের আরও সংযত হওয়া উচিত ছিল।

স্বাভাবিক ভাবেই রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে করোনার চিকিৎসা পরিষেবা ও তার পরিকাঠামো উন্নয়নে জোর দেওয়া হচ্ছে। মাঝে বেসরকারি হাসপাতালগুলি কোভিড বেডগুলিকে সাধারণ শয্যায় রূপান্তর করে ফেললেও, এখন তা ফিরিয়ে আনা হচ্ছে কোভিড বেড হিসেবে। শতকরা ২০টি শয্যা করোনা আক্রান্ত ও সন্দেহভাজনদের জন্য ‘আইসোলেট’ করার কাজে হাত লাগিয়েছে বেসরকারি হাসপাতালগুলি। সরকারি হাসপাতালগুলিও প্রস্তুতি নিচ্ছে জোরকদমে। শুরু হয়ে গিয়েছে ভেন্টিলেটর, হাই-ফ্লো অক্সিজেন ক্যানুলা ইত্যাদির মতো জীবনদায়ী যন্ত্রের টেস্ট-রান।
স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকরা অবশ্য জানাচ্ছেন, আশঙ্কার মধ্যেও রয়েছে ভালো দিক। এক পদস্থ স্বাস্থ্য-আমলা বলেন, ‘এই যে কয়েক দিনের মাথায় আড়াই-তিন গুণ বেড়ে গেল আক্রান্তের সংখ্যা, তার নেপথ্যে করোনা ছড়িয়ে পড়ার চেয়েও বেশি ভূমিকা রয়েছে যথাযথ ‘কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং’-এর। পজিটিভ চিহ্নিত হয়েছেন যাঁরা, তাঁদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন উপসর্গহীন।’ ওই আধিকারিক মনে করিয়ে দিচ্ছেন, গত বছর জুলাইয়ের গোড়ায় দৈনিক গড়ে ১০ হাজার ও মাসের শেষের দিকে রোজ গড়ে ১৭-১৮ হাজার নমুনা টেস্ট হত। কিন্তু এখন প্রতিদিন প্রায় ২৫ হাজার বা তার বেশি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। সপ্তাহখানেকে এই টেস্টের সংখ্যাটা হাজার সাতেক বেড়েছে। তাই এখনই বিচলিত হয়ে পড়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলে আশ্বাস দিচ্ছেন তিনি।

(৩ সপ্তাহেই বাংলায় ৩ হাজার ছোঁবে দৈনিক আক্রান্ত)

Peace Black Cumin Oil 200ml

আবারও মুম্বায়ে বাড়তে চলছে করোনা ভাইরাস!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here