দিল্লী :- দিল্লী ইউনিভার্সিটি আরবি বিভাগের অধ্যাপক ওয়ালী আখতার সাহেব গত মঙ্গলবার করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তার এই আকস্মিক মৃত্যুতে দিল্লী ইউনিভার্সিটি চত্বরে শোরগোল পড়ে যায়। যদিও এই শোরগোলের কারণ অধ্যাপকের আকস্মিক মৃত্যু নয় বরং করোনায় আক্রান্ত হয়ে তার অস্বাভাবিক মৃত্যু। অধ্যাপকের পরিবারের অভিযোগ, আক্রান্ত ব্যক্তিকে হাসপাতলে ভর্তি করতে গিয়ে এক এক করে মোট ছয়টি হাসপাতালের চক্কর কাটতে হয়েছে কিন্তু কেউ তাকে এডমিট করেননি এবং শেষ পর্যন্ত পথেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
অধ্যাপকের পরিবারের তরফ থেকে জানা যাচ্ছে, গত ২রা জুন ওয়ালী আক্তার সাহেবের শরীরে জ্বর ও সঙ্গে হালকা কাশির উপসর্গ দেখা দেয়। এরপর পরিবারের লোক তাকে দিল্লির বিখ্যাত বনসাল হাসপাতালে নিয়ে যায় কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সংক্রমিত ব্যক্তিকে ভর্তি করতে অস্বীকার করলে পরিবারের লোক তাকে হোলি ফ্যামিলি হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে তাকে মূলচাঁদ হাসপাতলে ট্রান্সফার করা হয় পরবর্তীতে তাকে আবারও কৈলাস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে কৈলাস হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে প্রত্যাখ্যান করলে প্রফেসরকে হোলি ফর্টিস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এইভাবে এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতলে ছোটাছুটি করতে করতেই রাস্তা পথেই অধ্যাপকের মৃত্যু হয়ে যায়। পরিবারের অভিযোগ, কোনো হাসপাতালই রোগীকে নেওয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেনি। কোনো কর্তৃপক্ষ বলেছে আমরা করোনা আক্রান্ত রোগীদের নিই না আবার কোন কোন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে আমাদের কাছে জায়গা খালি নেই। এইভাবে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে তারা রোগীকে নিতে অস্বীকার করে এবং অধ্যাপকের মৃত্যু হয়।
মৃত্যু অধ্যাপকের ভাই জামিল মহাশয় জানান
“আমরা খুবই দুঃখ পেয়েছিলাম যখন হোলি ফর্টিস হাসপাতালের কর্মীরা আমাদের ভেতরে প্রবেশ করতেই বাধা দিচ্ছিল আর এই ব্যাপারটাই আমার ভাইকে খুবই ব্যথিত করেছিল।”
তিনি আরো বলেন, এই ঘটনা বুঝিয়ে দিচ্ছে হাসপাতাল গুলির উপর রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকার কারোও কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। হাসপাতালগুলিতে সরকারের নিয়ন্ত্রণ থাকলে এরকম অমানবিক আচরণ তারা করত না। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে সরকারের দাবি গুলো ফাঁপা।
অন্যদিকে দিল্লী ইউনিভার্সিটি প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আদিত্য নারায়ান মিশ্র অধ্যাপকের মৃত্যুর জন্য স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষকে দায়ী করে বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে হাসপাতাল গুলির ব্যাপক সমালোচনা করেন।