যৌনাঙ্গ দেখানো যৌন নির্যাতন নয়’, বম্বে হাইকোর্টের রায়

0
Spread the love

নিজস্ব সংবাদ দাতা ; টি নিউজ ওয়ার্ল্ড:-যৌনাঙ্গ দেখানো যৌন নির্যাতন নয়’, বম্বে হাইকোর্টের রায়।প্যান্টের জিপ খুলে রাখা অথবা যৌনাঙ্গ দেখানো যৌন নির্যাতনের আওতায় পড়ে না। ফের বম্বে হাইকোর্টের পকসো আইনের অধীনে দেওয়া রায়ে বিতর্ক অব্যাহত। পাশাপাশি জোর করে হাত ধরে রাখলেও সেটি যৌন নিগ্রহের আওতায় পড়ে না বলে রায় দিয়েছেন নাগপুর বেঞ্চার বিচারপতি পুষ্পা গানেদিওয়ালা।

এক ৫০ বছরের ব্যক্তি এক পাঁচ বছরের শিশু কন্যাকে জোর করে ধরে, তার সামনে প্যান্টের জিপ খুলে যৌনাঙ্গ প্রদর্শন করেন। সেই ঘটনার পরিপেক্ষিতে সেশন কোর্ট ২৫ হাজার টাকা জরিমানা ও ৫ বছরের কারাদণ্ড দিলেও বম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চের বিচারপতি আইনের ব্যাখ্যা দিয়ে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ এবং ৩৪২ নম্বর ধারা মোতাবেক ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন অভিযুক্তকে। বিচারপতি পুষ্পা গানেদিওয়ালা আইনের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, প্যান্টের জিপ খুলে রাখা অথবা যৌনাঙ্গ প্রদর্শন করা যৌন নির্যাতনের আওতায় পড়ে না। কারণ ত্বকের সঙ্গে সংস্পর্শ হয়নি। তাই এটিকে যৌন হয়রানির আওতায় ফেলা যায়।

শিশুকন্যার মায়ের অভিযোগ, ওই ৫০ বছরের ব্যক্তি তাঁর ৫ বছরের মেয়ের হাত ধরে টানাটানি করে তাঁকে বিছানায় নিয়ে যাওয়ার জন্য জোর করেন। এর মাঝে প্যান্টের জিপ খুলে যৌনাঙ্গ প্রদর্শন করেন। তার অভিযোগের ভিত্তিতে প্রথমে সেশন কোর্টে পকসো আইনের আওতায় ওই অভিযুক্ত ব্যক্তিকে শাস্তি দেওয়া হলেও তা বাতিল হয়ে যাবে বম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চে। তিনি আইনের ব্যাখ্যা দিয়ে যুক্তি দেন, এই ঘটনায় ত্বকে স্পর্শ ও পেনিট্রেশন (Penetration) বা অঙ্গপ্রবেশের মতো ঘটনা ঘটেনি।

প্রসঙ্গত, নাগপুর বেঞ্চের বিচারপতি পুষ্পা গানেদিওয়ালা (Pushpa Ganediwala) রায়ে এও বলেন, ‘কোনও নাবালিকার যৌন নিগ্রহ প্রমাণ করতে গেলে শারীরিক সংস্পর্শ হয়েছে তার প্রমাণ দিতে হবে। অন্যদিকে, জামাকাপড় না খুলে, যদি স্তনে হাত দেওয়া হয় তাহলেও সেটি যৌন নিগ্রহের আওতায় পড়বে না। পকসোর-র ৭ নম্বর ধারা অনুযায়ী এই রায় দেওয়া হয়েছে। ১২ বছরের একটি কিশোরীর যৌন হেনস্থা নিয়ে শুনানির রায় দিতে গিয়ে এমনই রায় দিয়েছে বম্বে হাইকোর্ট’।

এই ঘটনায় মেয়েটিকে বাড়িতে ডেকে তার সঙ্গে অসভ্য আচরণ করেন এক ব্যক্তি। তার স্তনে হাত দিয়ে পোশাক খোলার চেষ্টা করেন। কিন্তু সেই মুহূর্তে তাঁর মা এসে যাওয়ায় মেয়েটিকে ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে অভিযুক্ত। তার নামে স্থানীয় পুলিস স্টেশনে এফআইআর করা হয়। অভিযোগ ভিত্তিতে আটক করা হয় ওই ব্যক্তিকে তারপর বম্বে হাইকোর্ট পর্যন্ত জল গড়ায়। শুনানির রায়ে হাইকোর্ট জানায় পকসো আইনের আওতায় ওই ব্যক্তি দোষী নয়। তবে, ৩৫৪ (শ্লীলতাহানি) ও ৩৪২ (জোর করে আটকে রাখা) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। কারণ এই ঘটনায় নাবালিকার ত্বকে স্পর্শ ও পেনিট্রেশন (Penetration) বা অঙ্গপ্রবেশের মতো ঘটনা ঘটেনি।

বম্বে হাইকোর্টের এই রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে আজ সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করেন অ্যাটর্নি জেনারেল। শুনানির পর রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ দিল সর্বোচ্চ আদালত। বম্বে হাইকোর্টের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শীর্ষ আদালতে আবেদন জানায় কেন্দ্র। বুধবার তারই শুনানি চলাকালীন কেন্দ্রের অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল বলেন, বম্বে হাইকোর্টের রায় অত্যন্ত বিরক্তিকর। এই রায় একটি বিপজ্জনক নজির সৃষ্টি করবে।

 

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here