কোথায় সোনার বাংলায় গণতান্ত্রিক মানবতা ?

0
Spread the love

নিজস্ব প্রতিবেদন ; টি নিউজ ওয়ার্ল্ড:-বিতর্ক ও বিতন্ডা (১৫৬)

হত্যা–!  শুধুই খেলছে হোলির হত্যা-!

নানান বিধি নানান রীতি সবকিছুতেই হত্যা।

মুসলমানেদের যেকোনো হালাতে হত্যা।

বাই দ্য মুসলিম ফর দ্য মুসলিম অফ দা মুসলিম।

রাজনীতির লেলিহানে রক্ত খেলা, হত্যা আর হত্যা মুসলমানদের হত্যা ।

মীর জাফর

মীর জাফর একটি ঐতিহাসিক চরিত্র। ভারত উপমহাদেশের ইতিহাসে সর্বাধিক কুখ্যাত চরিত্র। তার বিশ্বাস ঘাতকতা প্রবাদ প্রতিম। তার ও তার দোসরদের ভূমিকা ভারত উপমহাদেশের ইতিহাসের গতিপথ নির্ণয় করেছে।

সর্ব সম্প্রতি তার নাম খুব বেশি আলোচিত হচ্ছে। তার মানসজাত সন্তানরা নাকি আবার তাদের ঐতিহাসিক কর্তব্য পালন করতে যুদ্ধ ময়দানে অবতীর্ণ হচ্ছে। প্রতিদিন রায় বল্লভ ও জগৎ শেঠরা মীর জাফরের সঙ্গে গভীর চক্রান্ত বিস্তারে সক্রিয় হচ্ছে।

মমতার সরকার বিষয়ে আমি খুব শ্রদ্ধাশীল নয়। আমি সক্রিয় রাজনীতি করি না কিন্তু রাজনীতি বিরাগী নয়। সমাজের সচেতন নাগরিক, রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক ও ভাষ্যকার রূপে যা কিছু প্রত্যক্ষ করি ও পর্যবেক্ষণ করি তা বিভিন্নভাবে সাধারণ মানুষ ও সহমর্মীদের সঙ্গে শেয়ার করি। বক্ষমান এই পর্যবেক্ষণ সে রকম একটি লেখা। কারো পক্ষে বা বিপক্ষে নয়।

গণতন্ত্রের চেয়ে উৎকৃষ্ট বিকল্প ব্যবস্থা উপস্থাপন করতে না পারলে গণতন্ত্রকে আক্রমণ করা যাবে না। আমার বিশ্বাস, দেশে দেশে প্রচলিত তথাকথিত গণতন্ত্র , আদর্শ গণতন্ত্র নয়। ভারতবর্ষে প্রচলিত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কিভাবে অবক্ষয় হয়েছে তা শুধু রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক নয় সাধারণ মানুষও উপলব্ধি করতে সক্ষম।

মাফিয়া ও লুটেরাদের এখন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ বলা হয়। যত বড়ো অপরাধী ও ধান্দাবাজ তত বড়ো প্রভাবশালী নেতা। তাদের সৃষ্ট ত্রাশ কত প্রভাবশালী তা প্রমাণিত হয়, তারা কারা অন্তরালে থেকেও তথাকথিত নির্বাচনে জয়ী হয়। তারা প্রতিটি রাজনৈতিক দলের জয় ও পরাজয় নির্ণয় করে। কোটি কোটি মানুষ তাদের পণবন্দি। তাদের কোনো স্বাধীন ইচ্ছা নেই। তারা স্বাধীন ইচ্ছা ব্যক্ত করতে সক্ষম নয়।

বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক ময়দানে রাজনৈতিক মাফিয়াদের প্রবল উপস্থিতি এক ভয়ানক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। এই রাজনৈতিক মাফিয়াদের কাছে রঙ বদল বা দল বদল পেশাদারিত্বের পরিচয়। তারা মনে করে, রাজনৈতিক কর্তৃত্বকে দীর্ঘস্থায়ী করতে যা কিছু করতে হবে তা তারা করতে প্রস্তুত। কোনো অপরাধ বোধ তাদের বিবেক বোধকে নাড়া দেয় না।

মীর জাফরের উত্তরসূরীরা দল বদলকে জার্সি বদল বলে। এদের মধ্যে যারা বর্ষিয়ান তারা রাজনীতি শুরু করেছিল জাতীয় কংগ্রেসের প্লাটফর্ম থেকে। ইতিমধ্যে তারা কংগ্রেস থেকে সিপিএম, সিপিএম থেকে তৃণমূল কংগ্রেস এবং এখন তৃণমূল থেকে বিজেপির কাফেলায় ভিড়ছে। তাদের জীবনের একটি এবং একমাত্র লক্ষ্য, যেকোনো মূল্যে প্রতিপত্তি ধরে রাখতে হবে।

আমার পর্যবেক্ষণ, রাজনৈতিক এথিক্সের অবক্ষয় কংগ্রেস যেখানে শেষ করেছিল সিপিএম সেখান থেকে শুরু করেছিল। সিপিএম যেখানে শেষ করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস সেখান থেকে শুরু করে। আর বিজেপি শুরু করেছে তৃণমূল যেখানে পৌঁছে গেছে। তৃণমূল জাত নব্য বিজেপির নেতা ও কর্মীদের গতিবিধি লক্ষ্য করুন। এই উচ্ছিষ্ট কীটগুলো সুস্থ সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে।
আমার মনে বারবার একটি প্রশ্নের উদয় হয়, গণতন্ত্র না রাজতন্ত্র মানুষের সহজাত রাজনৈতিক ব্যবস্থা। আমরা যারা সকাল সন্ধ্যা নিন্দা করে রাজতন্ত্রের বাপান্ত করি, তারা আবার স্বতঃস্ফুর্তভাবে রাজনৈতিক পরিবারগুলোর অন্ধ অনুরাগী। এজন্য এদেশে গণতন্ত্রের মোড়কে কত রাজা ও রানীর উদ্ভব হয়েছে! এজন্য অনেকেই শুধু নেহরু পরিবারকে দায়ী করেন। কেউ কেউ অভিষেকের উত্থানে রাজতন্ত্রের ছায়া দেখতে পায়। কেউ কেউ প্রশ্ন করেন, অধিকারী পরিবার মেদনিপুরে আর গনী খানের পরিবার মালদাতে যে পারিবারিক প্রতিপত্তি প্রতিষ্ঠা করেছে তা কি মানুষের রাজতন্ত্রের প্রতি সহজাত শ্রদ্ধার বহিঃপ্রকাশ নয়? মমতা দেবী মেদিনীপুরের একটি পরিবারের হাতে এম পি, এম এল এ, চেয়ারম্যান ও পর্যবেক্ষক কত পদ উপহার দিয়ে গণতন্ত্রের প্রতি যে আস্থা প্রকাশ করেছেন, তা প্রবাদ প্রতিম। শুভেন্দু নাকি খুব মুসলিম দরদী! তাই, মুসলিম প্রধান জেলাগুলো তাকে অর্পণ করা হয়! এক সময় তিনি মুকুলকে ও তার পরিবারকে দলের সাংগঠনিক সব দায়িত্ব তুলে দিয়েছিলেন। তার প্রতিদান তিনি কড়ায় গন্ডায় দিয়ে দিয়েছেন! শোভন বাবুকে তোয়াজ না করলে নাকি কোলকাতা ও দক্ষিণ বঙ্গের মানুষ রুষ্ট হবে! তাই, তাকে নিয়ে কত আদিখ্যেতা! তিনি নিজেও নাকি হিন্দুদের সাক্ষাৎ দূর্গা দেবী! আর মুসলিমদের সাক্ষাৎ মাসিহা! হায়রে রাজনীতি!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here